• শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

সন্তানের সুশিক্ষায় পিতা- মাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য

Reporter Name / ১৫১ Time View
Update : সোমবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২২

ধর্ম ও জীবন ডেস্কঃ– সন্তানের সুশিক্ষায় পিতা- মাতার ভূমিকা অনস্বীকার্য। সন্তান সন্ততি পিতা- মাতার দর্পন স্বরূপ। পিতা- মাতা তাদের সাথে যে ব্যবহার করবেন, তাদের মধ্যেও সেই চারিত্রিক গুণাবলী বিকশিত হবে। বাল্য কাল থেকেই শিশুর গ্রহণ ও অণুকরণ করার অভ্যাস গড়ে ওঠে। সে যা দেখে তারই অনুকরণ করতে শেখে। তাই তাদের সাথে সর্বদা ভাল আচরণ করা উচিত। সন্তান সন্ততির জন্য পিতা- মাতার দোয়া যাদুর মতো কাজ করে। শিষ্টাচারপূর্ণ আচার আচরণ শেখার পাশাপাশি আল্লাহর নিকট দোয়া করা উচিত।

মহানবী (সা.) পিতা- মাতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘কোনো পিতা তার পুত্রকে উত্তম শিষ্টাচার অপেক্ষা অধিক শ্রেয় আর কোনো বস্তু দান করতে পারে না’ (তিরমিজি)। তাই পিতামাতার উচিত হবে সন্তানদের উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলা। হাদিসে উল্লেখ আছে, এক সাহাবী মহানবী (সা.) এর কাছে এসে বলেন ‘হে আল্লাহর রাসূল! সন্তানের ওপর পিতা- মাতার কি হক বা দাবি আছে? তিনি (সা.) বললেন, তারা উভয়েই তোমার বেহেশতও এবং দোযখও’ (ইবনে মাজাহ)।

সন্তান যে পরিবেশে বড় হবে তাই সে শিখবে,  আল্লাহতায়ালা এ পৃথিবীতে ধনসম্পদ ও সন্তান- সন্তুতি দিয়ে থাকেন পরীক্ষা করার জন্য। অনেক কে আল্লাহ তায়ালা প্রচুর ধন- সম্পদ দান করেন ঠিকই কিন্তু সেই ধনসম্পত্তির সঠিক ব্যবহার না করার ফলে দেখা যায় সে ধ্বংস হয়ে যায় আবার কাউ কে সন্তান- সন্তুতি দেন ঠিকই কিন্তু তাদেরকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত না করার ফলে এই সন্তান তার জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। সন্তান- সন্তুতি যদি প্রকৃত নৈতিকগুণ সম্পন্ন না হয় তাহলে মাতা- পিতার জন্য তা একটি আজাব ছাড়া কিছুই না।

জীবন বিধান আল কোরআনের সূরা কাহাফের ৪৬ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ধন- সম্পদ ও সন্তান সন্তুতি দুনিয়ার সৌন্দর্য। এ সন্তান সন্তুতি যদি আদর্শ চরিত্রের না হয় তাহলে তা হয় মা- বাবার জন্য পরীক্ষার কারণ, দুঃখের বোঝা।’ আর এজন্যই আল্লাহ তায়ালা কোরআন করিমে মুমিনদেরকে হুশিয়ার করে বলেছেন, ‘আর জেনে রাখ, তোমাদের ধন- সম্পদ ও সন্তান- সন্তুতি পরীক্ষার কারণ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৭)। আরো বলা হয়েছে, ‘হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের পরিবারবর্গকে আগুন থেকে বাঁচাও’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ৬)।

প্রতিদিন গণমাধ্যমে যে খবরটি নিয়মিত থাকেই তা হল চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, হত্যা ইত্যাদি। গণমাধ্যমে এই খবরগুলো খুব ভালো করে স্থান দখল করে নিয়েছে। এমন কোনো দিন বাদ যায় না যে, যেদিন এসব খবর প্রকাশ না পায়। এসব অপকর্ম যারা করে তারাতো কোনো না কোনো পিতা- মাতারই সন্তান। এছাড়া তারা কোনো না কোনো ধর্মের অবশ্যই অনুসারী। সে যে ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন, কোনো ধর্মেই এধরণের গর্হিত কাজকে অনুমতি দেয় না।

আমাদের সন্তানদের এত অবক্ষয় কেন? এর কারণ কি? সমাজে যারা নানান অপকর্মে লিপ্ত তাদের সম্পর্কে যদি আমরা একটু খোজ নেই, তাহলে দেখতে পাব যে, তাদের পিতা- মাতা আসলে তাদেরকে সেভাবে গাইড করেন নাই, যেভাবে করা উচিত ছিল। সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে বন্ধুত্ব করছে এসবের কোনো খেয়ালই রাখা হয় না। সন্তানদের সম্পর্কে কোনো চিন্তা নাই বলেই তাদের মাধ্যমে আজ সংঘঠিত হচ্ছে যত ধরণের ঘৃণ্য কাজ। আমাদের সন্তান সম্পর্কে আমরা যদি সচেতন থাকি এবং উত্তম শিক্ষা প্রদান করি, তাহলে কোনো পিতা- মাতার সন্তানের পক্ষে কোনো ভাবেই সম্ভব নয় কারো ক্ষতি করা।

আমরা যদি নেক সন্তান রেখে যেতে পারি, তাহলে দেশ ও জাতির জন্য তা যেমন কল্যাণকর হবে, তেমনই আমাদের মৃত্যুর পরও এ সন্তান আমাদের জন্য সদকায়ে জারিয়া হিসেবে থেকে যাবে। সন্তান সন্ততি আল্লাহ তায়ালার দান। কোনো সন্তানই জন্ম থেকে খারাপ হয় না। পারিপার্শ্বিক অবস্থা বা পিতা- মাতার অবহেলার কারণেই সন্তান মন্দ পথে পা বাড়ায়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সন্তানদেরকে সঠিক ইসলামী শিক্ষা দিয়ে গড়ে তোলার তৌফিক দান করুন, আমিন।#

Please Share This Post In Your Social Media


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category